নোয়াখালীতে ছাত্রশিবিরের কোরআন প্রশিক্ষণে বিএনপির হামলা

Daily Daily

Zakiganj

প্রকাশিত: ৭:৩৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৯, ২০২৫

নোয়াখালীর সদর উপজেলায় একটি মসজিদে ছাত্রশিবির আয়োজিত কুরআন তালিম অনুষ্ঠানে বিএনপি,যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ছাত্রশিবিরের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

আজ রবিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে নোয়াখালীর সদর উপজেলার নেওয়াজপুর ইউনিয়নের কাসেম বাজার জামে মসজিদে আসর নামাজের পর এ ঘটনা ঘটে। পরে সুধারাম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে জেলা শহর শাখা ছাত্রশিবির। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শহর শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আবদুল্যাহ আল মাহবুব।

জানা গেছে, নোয়াখালীর সদর উপজেলার নেওয়াজপুর ইউনিয়নের কাসেম বাজার জামে মসজিদে কুরআন প্রশিক্ষণ করছিলেন ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। পরে সেখানে যুবদল নেতা ও ইউনিয়ন সভাপতি ফারুকের নেতৃত্বে শিবির নেতাকর্মীর ওপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন নোয়াখালী জেলার শহর শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আবদুল্যাহ আল মাহবুব।

তিনি বলেন, বলেন, সদর উপজেলার নেওয়াজপুর ইউনিয়নের কাসেম বাজার জামে মসজিদে ছাত্রশিবিরের কুরআন তালিম অনুষ্ঠানে স্থানীয় যুবদল নেতা ফারুক ও তার অনুসারীরা অনাকাঙ্খিত হামলা করেছে এবং চোখ তুলে ফেলার হুমকি দিয়েছে। তাই আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে থানায় একটি জিডি করেছি।

এ বিষয়ে নোয়াখালী জেলার পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল ফারুক দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে কাজ করছেন।

নব্য ফ্যাসিস্ট ও কুরআন বিদ্ধেষী রাজনীতি টাইটেলে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘নোয়াখালী সদরে ছাত্রশিবির আয়োজিত কুরআন প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামে হামলা চালিয়েছে স্থানীয় বিএনপি-যুবদলের সন্ত্রাসীরা। শিক্ষার্থীদেরকে হামলা করে মাথা পাঠিয়ে রক্তাক্ত করা হয়েছে।

কুরআন প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামে হামলা কোনো সভ্য মানুষ করতে পারে না। অসভ্যতার একটা সীমা থাকা উচিত। ৩৬ জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশে কোনো ফ্যাসিবাদী কার্যক্রম এই প্রজন্ম সহ্য করবে না। আওয়ামী চরিত্রের চাঁদাবাজ, দখলদার ও সন্ত্রাসীদের রাজনীতি আর চলবে না। চলতে দেওয়া হবে না। আমরা দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে হবে। নতুবা যেকোনো পরিস্থিতির দায় সরকারকে নিতে হবে।’

এদিকে হামলার ঘটনায় একটি বিবৃতি দিয়েছে শহর শাখা ছাত্রশিবির। জেলার প্রচার সম্পাদক কে এম ফজলে রাব্বি স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, নোয়াখালী সদর উপজেলার নেয়াজপুর ইউনিয়নের কাশেমবাজার এলাকায় ছাত্রশিবির আয়োজিত কোরআন তালিমে ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি ফারুকের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলার তীব্র নিন্দা ও জড়িতদের বিচারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, নোয়াখালী শহর শাখা।

আজ রবিবার নোয়াখালী শহর সভাপতি হাবিবুর রহমান আরমান ও শাখা সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ আল মাহবুব এক যৌথ বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ ও বিচারের দাবি জানান।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, আজ রবিবার বাদ আছর নেয়াজপুর ইউনিয়নের কাশেমবাজার মসজিদে ছাত্রশিবির কর্তৃক আয়োজিত কোরআন তালিম অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় স্থানীয় যুবদল নেতা ফারুক ও তার সহযোগীরা মসজিদের ভেতরে মব সৃষ্টি করে ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালায় এবং অঙ্গহানির হুমকি প্রদান করে। মসজিদের ভেতরে কোরআন তালিমের মতো ধর্মীয় শিক্ষামূলক আয়োজনে এমন হামলা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ও নিন্দনীয়।

তারা আরও বলেন, ছাত্রশিবির একটি আদর্শিক সংগঠন। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ছাত্রসমাজের মাঝে নৈতিক, আদর্শিক ও মানবিক মূল্যবোধ গঠনে কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীবান্ধব ও গঠনমূলক কাজে ভীত হয়ে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার ছাত্রশিবিরের সকল গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। সম্প্রতি বিএনপি, ছাত্রদল ও তাদের সহযোগী সংগঠনসমূহও নব্য ফ্যাসিবাদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। নারী হেনস্তা, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি এবং বিরোধী সংগঠনের কর্মসূচিতে হামলা এখন তাদের রুটিন কার্যক্রমে পরিণত হয়েছে।

বিবৃতিতে নেতারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই—ধৈর্য, সহনশীলতা ও শিক্ষার্থীদের প্রতি দায়বদ্ধতা ছাত্রশিবিরের দুর্বলতা নয়। ছাত্রশিবির শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ও সক্ষম। অবিলম্বে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিহার না করলে আপনারও অতীত ফ্যাসিবাদের মতো ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন। আমরা এই ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।

সুত্র: ডেইলি ক্যাম্পাস