

তানিম আহমদ | ডেইলি জকিগঞ্জ ডেস্ক
জকিগঞ্জের ব্যবসায়ী নু’মান উদ্দিন হত্যাকাণ্ডে এক বড় ধরনের মোড় এসেছে। নিহত নু’মান উদ্দিনের শ্যালক হানিফ উদ্দিন সুমন চার দিনের রিমান্ড শেষে বিজ্ঞ আদালতের কাছে হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। পারিবারিক কলহ এবং অর্থ-সম্পত্তির বিরোধকে কেন্দ্র করেই তিনি এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন বলে জানা গেছে।
আজ রবিবার (১৯ অক্টোবর) চার দিনের রিমান্ড প্রক্রিয়া শেষে সুমনকে আদালতের নির্দেশে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল্লাহ আল মোমেনের দাখিলকৃত প্রতিবেদনে এই চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদন অনুযায়ী, নু’মান উদ্দিন সুদীর্ঘ প্রায় তিন দশক সৌদি আরবে প্রবাস জীবন কাটিয়ে সম্প্রতি দেশে ফেরেন এবং কালিগঞ্জ বাজারে একটি মুদি দোকান দেন। এরপরই শুরু হয় পারিবারিক অশান্তি। প্রবাস থেকে উপার্জনের যে অর্থ তিনি দেশে পাঠিয়েছিলেন, সেই টাকার হিসাব চাইতেই দুলাভাই নু’মান উদ্দিনের সঙ্গে শ্যালক সুমনের তীব্র বিরোধের সূত্রপাত হয়। এই বিরোধের জেরেই সুমন তাঁর দুলাভাইকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার মতো ভয়ংকর পরিকল্পনা করতে থাকেন।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী, সুমন তাঁর পরিচিত কয়েকজন সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে ব্যবসায়ী নু’মান উদ্দিনকে হত্যা করেন। রিমান্ডে সুমন কেবল হত্যার দায় স্বীকারই করেননি, বরং এই জঘন্য কর্মকাণ্ডে জড়িত অন্য সহযোগীদের নামও তদন্তকারী দলকে জানিয়েছেন।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুল্লাহ আল মোমেন জানিয়েছেন, এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সুমনের সহযোগীদের দ্রুততম সময়ে গ্রেপ্তার করতে জোরদার অভিযান চলছে। প্রয়োজনে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্ত সুমনকে আবারও রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন জানানো হতে পারে।
আলোচিত ব্যবসায়ী নু’মান উদ্দিনের মৃত্যুর পর পরই একটি অডিও কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। সেই রেকর্ডে শ্যালক সুমনকে বুকফাটা আর্তনাদ ও কান্নায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করতে শোনা যায়। তিনি জোর দিয়ে বলেছিলেন, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই। তাঁর এই ‘কান্নার নাটক’ তখন স্থানীয়দের সহানুভূতিও পেয়েছিল। তবে, রিমান্ডে সুমনের স্বীকারোক্তি সেই ভাইরাল কান্নার আড়ালের সত্য উন্মোচন করল।